রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে ফের শীর্ষে সউদী আরব

28

সউদী আরব তিন মাসের তেল বাজারের অস্থিরতা থেকে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গত বছর প্রাপ্ত শীর্ষ সøট থেকে ছিটকে দিয়েছে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা গণনা করে দেখেছেন, এপ্রিল মাসে – যখন মহামারী লকডাউনের কারণে তেলের দাম পড়ে গিয়েছিল সউদী আরব প্রতিদিন রেকর্ড প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৮৬ লাখ ব্যারেল তেল রফতানি করে।
রফতানি কমানোর ঐতিহাসিক ওপেক+ চুক্তির পরে মে মাসে উভয় দেশের রফতানি হ্রাস পায়, তবে সউদী তখনও এগিয়ে ছিল। চলতি বছরের বেশিরভাগ সময় এ প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ সউদী আরব হ্রাসকৃত তেল উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া সত্তে¡ও উৎপাদন মূল্যের সাথে তাল মেলাতে না পেরে শেল দেউলিয়া হয়ে পড়েছে।

শিল্প বিশেষজ্ঞদের সঙ্কলিত পরিসংখ্যান প্রকাশক মিডল ইস্ট ইকোনমিক জরিপ বলেছে, ‘২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে পুরো সউদী আরবকে সহজেই পিছু ধাবমান দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা উচিত’। আমেরিকা গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বের শীর্ষ রফতানিকারী হিসাবে সউদী আরবকে ছাড়িয়ে যায়। এপ্রিলে মার্কিন বেঞ্চমার্ক, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম পড়ে যাওয়ার পরে অনেক শেল উৎপাদক তাদের লাভের আশা ছেড়ে দেয় এবং কেউ কেউ দেউলিয়াত্বের আবেদন করে।

চীনে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সম্ভাব্য দ্বিতীয় তরঙ্গ নিয়ে সপ্তাহান্তে উদ্বেগের কারণে তেলের দাম কমছে। ব্রেন্ট ক্রুড, গ্লোবাল বেঞ্চমার্ক ৪০ ডলারে ওঠে, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ৩৭ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার একটি প্রতিবেদনে ২০২০ সালে প্রত্যাশার চেয়ে তেলের চাহিদা নাটকীয় হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। চাহিদা দৈনিক ৯ কোটি ১৭ লাখ ব্যারেল হবে যা এজেন্সির আগের পূর্বাভাসের চেয়ে প্রায় ৫ লাখ ব্যারেল বেশি, তবে তা এখনও ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পতন। আইইএ জানিয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রাক-মহামারী বায়ু জ্বালানির চাহিদা পুনরুদ্ধার হবে না, কারণ বিমান চলাচল শিল্পে বিরাজমান ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’।

চীনে তেলের চাহিদা মার্চ এবং এপ্রিল মাসে দ্রুত পুনরুদ্ধার লাভ করেছিল এবং মে মাসে ভারতের চাহিদা তীব্র আকার ধারণ করে। সংস্থাটি বলেছে, ‘তেলের বাজার যখন নাজুক রয়ে গেছে, দামের সা¤প্রতিকতম পুনরুদ্ধার থেকে জানা যায় যে, ২০২০ সালের প্রথমার্ধটি আরও আশাবাদী নোটে শেষ হচ্ছে’।
ওপেক+ চুক্তির আকারে উদ্যোগ এবং জি-২০ জ্বালানি মন্ত্রীদের বৈঠক বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বড় অবদান রেখেছে। ওপেক+ জোটের যৌথ মন্ত্রিপরিষদ মনিটরিং কমিটি এ সপ্তাহের শেষের দিকে সম্মতিযুক্ত ছাড়গুলোর সাথে সম্মতি নির্ধারণের জন্য বৈঠক করবে, এমন কিছু জল্পনা করা হচ্ছে যে, চুক্তি অন্তত আরও এক মাস বাড়ানো যেতে পারে। সূত্র : আরব নিউজ