মন্দায় শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো

34

কভিড-১৯ এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে চিপ সংকট প্রকট হয়ে ওঠায় সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়ার উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে কভিডের সংক্রমণ পুনরুত্থান এ সংকটকে আরো কঠিন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আবারো গাড়ি উৎপাদন কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ করার কথা জানিয়েছে শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, কম্পিউটার চিপের ঘাটতি ক্রমে খারাপ হওয়ায় বন্ধ হচ্ছে জনপ্রিয় পিকআপ ট্রাক তৈরির কারখানা সংস্থাগুলো।

এর আগে টয়োটা, নিশান ও স্টেলান্টিসও একই ঘোষণা দিয়েছিল। সম্প্রতি মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জনারেল মোটরস (জিএম) ও ফোর্ড সাময়িকভাবে কারখানা বন্ধের কথা জানিয়েছে।

জেনারেল মোটরস(জিএম) জানায়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে উত্তর আমেরিকার ১৫টি সংযোজন কারখানার মধ্যে আটটির উৎপাদন বন্ধ করা হতে পারে। বন্ধের তালিকায় মার্কিন গাড়ি নির্মাতা সংস্থাটির সর্বাধিক বিক্রীত শেভ্রোলেট সিলভেরাডো পিকআপ তৈরির দুটি কারখানাও রয়েছে।

এদিকে আরেক মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ড আগামী দুই সপ্তাহের জন্য পিকআপ তৈরি বন্ধ করবে । এছাড়া সংস্থাটি মিশিগানের ডিয়ারবর্ন ও কেনটাকির লুইসভিলের আরো দুটি ট্রাক কারখানার শিফট কমিয়ে আনবে।

স্টেলান্টিস এ সপ্তাহে মিশিগানের স্টার্লিং হাইটসে ট্রাক কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। সংস্থাটির বেলভিডিয়ার, ইলিনয়, ছোট এসইউভি কারখানা এবং অন্টারিওর উইন্ডসরের একটি মিনিভ্যান কারখানাও দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রয়েছে।

টয়োটা জাপান ও উত্তর আমেরিকায় আগামী দুই মাসের জন্য উৎপাদন অন্তত ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনবে। কেবল সেপ্টেম্বরেই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে ৩ লাখ ৬০ হাজার ইউনিট যানবাহনের উৎপাদন হ্রাস করবে। একই কারণে গত মাসের মাঝামাঝিতে নিশান টেনেসির স্মিরনায় তার বিশাল কারখানাটি ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে বন্ধের মেয়াদ ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গাড়ি, ট্রাক ও এসইউভিগুলোর স্বল্প সরবরাহ তৈরি হয়েছে। নতুন করে কারখানা বন্ধ ও শিফট কমিয়ে নিয়ে আসা এ সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। ফলে গাড়ির দামও রেকর্ড স্তরের দিকে যাচ্ছে। মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, এসব সংকটের কারণে আগস্টে মার্কিন ডিলারদের কাছে থাকা নতুন যানবাহনের সংখ্যা ১০ লাখে নেমে এসেছে। এ সংখ্যা ২০১৯ সালের আগস্টে ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ইউনিটের চেয়ে ৭২ শতাংশ কম।

করগুরাস ডটকমের ইন্ডাস্ট্রি ইনসাইটের পরিচালক কেভিন রবার্টস বলেন, বছরের বাকি সময়ে নতুন গাড়ি বিক্রির সম্ভাবনাগুলো বাস্তবতার সঙ্গে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। ২০২২ পর্যন্ত এ কঠোর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। বাজারে ট্রাক, এসইউভি ও অন্যান্য গাড়ির প্রবল চাহিদা রয়েছে। তবে উচ্চমূল্যের কারণে ভোক্তারা হতাশ হয়ে পড়ছেন। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে হালাকা গাড়ি বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল। যখন গাড়ির গড় বিক্রয় মূল্য ৪১ হাজার ডলারেরও বেশি ছিল। এ সময়ে ফোর্ডের এফ-সিরিজ ট্রাকের বিক্রি ২৩ শতাংশ কমেছে।

আগস্টে বিক্রি কমে যাওয়ায় পুরো বছরে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি বিক্রির পূর্বাভাস ১ কোটি ৫৭ লাখে নামিয়ে আনতে প্ররোচিত করেছিল। মহামারীর আগে দেশটিতে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ গাড়ি বিক্রি হতো।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর করণীয় কি তা ভাবিয়ে তুলছে চাকুরিরত সাধারণদের।