রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) জানিয়েছে, পণ্য রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম মাসে বাংলাদেশ ৩.৯ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, এতে করে গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪.৭২%।
গত বছরের একই সময়ে বাংলাদেশ রপ্তানি আয় থেকে ৩.৪৭ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছিল।
২০২৩ অর্থবছরের জুলাইয়ে ৩.৯২ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রার জায়গায় ১.৬৫% বেশি আয় হয়েছে।
বাংলাদেশী পণ্যের প্রধান গন্তব্য ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা আতঙ্কে ছিলেন।
এছাড়া বহুমুখী উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, জ্বালানি ও বন্দর সমস্যাসহ কয়েকটি সংকটের কারণেও রপ্তানিকারকরা কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলেন। এছাড়া কাজের আদেশ কম পাওয়াতেও তারা আশঙ্কা করেছিলেন রপ্তানির গতি ধীর হতে পারে।
ইপিবি বলছে, পোশাক খাতে রপ্তানি থেকে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ৩.৩৬ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে। গত বছরে এটি ছিল ২.৮৮ বিলিয়ন ডলার। হিসাবমতে গত অর্থবছরের তুলনায় এটি ১৬.৬১% বৃদ্ধি পেয়েছে।
পোশাক পণ্যের মধ্যে, নিটওয়্যারে আয় গত বছরের একই সময়ের মধ্যে ১.৬৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ১১.৮০% বেড়ে ১.৮৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। তৈরি পোশাকে ১.২২ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৩.১১% বেড়ে ১.৫১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
ইপিবি বলছে, হোম টেক্সটাইল রপ্তানি খাতে নতুন খেলোয়াড় হিসেবে উঠে এসেছে। এই খাত অর্থবছরে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩.৮৯% বেড়ে ৯৫.৯৫ মিলিয়ন ডলার থেকে ৯২.৩৬ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খাতের মধ্যে রয়েছে কৃষি পণ্য। গত অর্থবছরে এটির ৩৪.৮৯% পতন হয়েছে। গত বছরের ৯৮.১৫ মিলিয়ন ডলার থেকে ৬৩.৯১ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের দাম ৯.৮২% বৃদ্ধি পেয়ে ৯৯.৪১ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ৯০.৫২ মিলিয়ন ডলার ছিল।
দেশের আরেকটি প্রতিশ্রুতিশীল রপ্তানি খাত প্রকৌশল পণ্যে গত বছরের ৩৩.০৩ মিলিয়ন থেকে ৩১.৮৮% বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩.৫৬ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।
পাট ও পাটজাত পণ্যে গত অর্থবছরের সব মাসে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বছরের শেষে ৫.১৭% বৃদ্ধি পেয়ে ৬৩.৯১ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ৬০.৭৭ মিলিয়ন ডলার ছিল।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই কঠিন সময়ে এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা ইতিবাচকতার ইঙ্গিত দেয়।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি আমদানিকৃত মুদ্রাস্ফীতির মুখোমুখি, ইউরো ইউএস ডলারের বিপরীতে পড়ে যাচ্ছে, এবং আমদানি খরচ বাড়ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এই প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের শিল্পের টেকসই অবস্থা দেখাচ্ছে। তবে উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতি মন্দার মধ্য দিয়ে যাওয়ায় এখনও সচেতন থাকতে হবে।